গায়ে হলুদ বিয়ের অনুষ্ঠানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব । এটি বাঙালি জাতির কাছে বহু প্রচলিত উৎসব এর একটি। এটি মুলতঃ বিয়ে সম্পর্কিত একটি আচার যা বর ও কনে উভয়ই পালন করে। অনুষ্ঠান বর ও কনের বাড়িতে আলাদা আলাদা ভাবে পালন করা হয়।
গায়ে হলুদঃ সেকাল – একাল
সেকালঃ
=>পূর্বে দিনে নিজের বারির ছাঁদে বা উঠানে গায়ে হলুদ এর অনুষ্ঠান করা হত।
=> সামিয়ানা টানিয়ে, সাউন্ড সিস্টেম ভারা করা হত যদি খুব বিত্তশালী হত।
=> আবার অনেকে নিজেরাই হৈ চৈ করে , গান গেয়ে হলুদ এ মজা করত।
=> দাদি নানি, পারা পড়শি, বন্ধুরা ,ভাবিরা বনেরা মিলে গান গেয়ে গেয়ে , পাটায় হলুদ বেটে করত।
=> বর পক্ষের হলুদ নিয়ে এসে কনের গায়ে দিয়া হত।
=> গায়ে হলুদ এ কলশে করে পানি আগে থেকে উঠিয়ে রেখে তা দিয়ে গসল করাত।
=> ফুল হিসেবে হলুদ গাদা ফুল এর প্রচলন ছিল ।
=> হলুদ দিয়ে মুখে, হাতে,পায়ে মাখাত , পারলে হলুদ দিয়েই গোসল করানোর অবস্থা করত।
=> কনে বাদে ছোট বড় সবাই নেচে গেয়ে আনন্দ করত।
=> গায়ে হলুদ এ ফটো তোলার হিরিক ছিলনা বললেই চলে।
=> হলুদে মানুষজন নেমন্তন্ন তেমন করত না কিন্তু পাড়াপড়শিরা সবাই যার যার মত এসে দিত হলুদ।
=> বর কনের হলুদ এর জন্য আলাদা সাজ ছিল না।
=> হলুদ এ খাওয়া দাওয়া পান সুপারি বা জোর হলে মিষ্টি পর্যন্তই থাকত ।
=> হলুদ এর অনুষ্ঠান সকালে বা দুপরে হত।
একালঃ
=>এখনও নিজের বাড়ির ছাঁদে করলেও তা বুজার উপায় থাকে না সাজানোর ফলে।
=>বর্তমানে সামিয়ানা টানিয়ে, সাউন্ড সিস্টেম না থাকলেই যেন নয়।
=> এখন নিজেরা হৈ চৈ করলেও আবার ডিজে দেখা যায়।
=> বয়োজ্যেষ্ঠরা থাকলেও, সমবয়সীদের উপস্থিতি বেশি থাকে।
=> একালে কনেকে বরের বাসা থেকে হলুদ না এনেও হলুদ দেয়া হয়, আবার বর কনেকে এক সাথে হলুদ দিয়া হয়।
=> হলুদ এর গোসল বলতে এখন কোন নিয়ম মানা হয় না বললেই চলে।
=>গাদা ফুল এর পাশাপাশি পছন্দ অনুযায়ই ফুল পরা হয় বা বাজার থেকে প্লাস্টিক এর রেডি করা গয়না সেট পরে।
=> হলুদ এর নাম সামান্য লাগান হয়, যাতে সাজ নষ্ট না হয়।
=> বর কনে সহ সবাই নাচে।
=> এখন ফটো না তুল্লেই নয়। এখন ফটো তোলার টেকনিক বা স্টাইল বলে দেয়ার জন্য লোক ভারা করা হয়।
=> নেমন্তন্ন করা হয় কার্ড ছাপিয়ে এবং সাজ সবার এক হওয়া চাই।
=> বর কনে উভয়ে পার্লার ছারা সাজ যেন তাদের পূর্ণতা পায়ই না।
=> হলুদ এ খাওয়া দাওয়া মানেই তেহারি মিষ্টি , ফল আরও কত কিছু।
=> হলুদ সন্ধ্যা বা রাতেই হয়।